এমপক্সের প্রধান লক্ষণসমূহ

এমপক্স (Mpox), যা পূর্বে মাঙ্কিপক্স নামে পরিচিত ছিল, একটি বিরল কিন্তু গুরুতর ভাইরাসজনিত রোগ। এটি মূলত কেন্দ্রীয় এবং পশ্চিম আফ্রিকায় দেখা যায়, তবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অন্যান্য অঞ্চলেও এর প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই রোগটি পক্সভাইরাস পরিবারের অন্তর্গত, যা গুটিবসন্তের সঙ্গে সম্পর্কিত। এমপক্সের লক্ষণগুলো বিভিন্ন ধাপে প্রকাশ পেতে পারে, এবং এই রোগটি প্রতিরোধের জন্য লক্ষণগুলোর সঠিকভাবে চিহ্নিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

এমপক্সের প্রধান লক্ষণসমূহ:

১. জ্বর: এমপক্সের প্রধান প্রাথমিক লক্ষণ হলো জ্বর। আক্রান্ত ব্যক্তি হঠাৎ করেই উচ্চমাত্রার জ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন। জ্বর সাধারণত রোগের সংক্রমণের ১-৫ দিনের মধ্যে শুরু হয় এবং এটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

২. শরীরের ব্যথা ও ক্লান্তি: এমপক্সের আরেকটি সাধারণ লক্ষণ হলো মাংসপেশি ও জয়েন্টের ব্যথা। অনেক রোগী তীব্র ক্লান্তি অনুভব করেন এবং তাদের শক্তিহীনতা দেখা দেয়। 

৩. লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া: এমপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে লসিকা গ্রন্থি ফুলে ওঠে। এটি সাধারণত ঘাড়, বগল বা কুঁচকিতে হতে পারে। লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া এমপক্সের একটি উল্লেখযোগ্য লক্ষণ যা অন্য পক্স রোগ থেকে এটি আলাদা করে।

৪. চামড়ায় ফুসকুড়ি ও ঘা: এমপক্সের সবচেয়ে সুস্পষ্ট লক্ষণ হলো ত্বকে ফুসকুড়ি বা ঘা দেখা দেওয়া। প্রথমে এটি লালচে বা গোলাপি দাগ হিসেবে শুরু হয়, তারপর তা পূর্ণ ঘা হয়ে উঠতে পারে। এই ঘাগুলো সাধারণত মুখ, হাত, পা, এবং শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সময়ের সাথে সাথে, ঘাগুলোতে পুঁজ জমা হয় এবং পরে তা শুকিয়ে যায়।

৫. শ্বাসকষ্ট ও গলাব্যথা: কিছু রোগীর ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট বা গলাব্যথাও হতে পারে। এটি সাধারণত রোগের গুরুতর পর্যায়ে দেখা যায় এবং এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া উচিত।


এমপক্সের সনাক্তকরণ ও প্রতিরোধ

লক্ষণগুলো চিহ্নিত করার পর, এমপক্স সনাক্ত করার জন্য পিসিআর (PCR) পরীক্ষা করা হয়, যা রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করে। রোগের প্রতিরোধে ভ্যাকসিন এবং সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। এমপক্স একটি গুরুতর ভাইরাসজনিত রোগ, যার লক্ষণগুলি সময়মতো চিহ্নিত করা অত্যন্ত জরুরি। এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই, এমপক্সের যে কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এই রোগের প্রতি সতর্ক থাকা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আমাদের সকলের দায়িত্ব।


Post a Comment

Previous Post Next Post