সোলশেয়ার কি?

বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার জন্য প্রতিনিয়তই নানান চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে বাংলাদেশ। আর এই উন্নয়নশীল দেশ থেকে একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার জন্য বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি যে বাধাটির সম্মুখীন হতে হচ্ছে সেটি হলো পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাব। এখনো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না বাংলাদেশের পক্ষে। যার ফলে উক্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক এবং জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন অনেকটাই বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। আর উক্ত বিষয়গুলোকে মাথাই রেখে, আমাদের দেশের জন্য একটি নতুন আশার আলো নিয়ে হয়েছে সোলশেয়ার।

সোলশেয়ার কি?

সোলশেয়ার মূলত একটি  সংস্থার নাম। যেটি নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসকে ব্যবহার করে নির্দিষ্ট অঞ্চল বা জনগোষ্ঠীর জ্বালানির চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে থাকে। সোলশেয়ার মূলত পেয়ার টু পেয়ার মাইক্রোগ্রিড নেটওয়ার্ক স্থাপন করে থাকে। উক্ত মাইক্রোগ্রিড নেটওয়ার্কের সাহায্যে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুৎকে স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোর মাঝে সমানভাবে বন্টন করে দেওয়া হয়। 

যার ফলে একদিকে যেমন স্থানীয় সম্প্রদায়ের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ হয়, অপরদিকে সোলার প্যানেলের সাহায্যে উৎপাদিত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ পরবর্তী সময়ে অন্য কোনো গ্রাহকের কাছে বিক্রিও করা যায়। যা একইসাথে পরিবেশবান্ধব এবং অর্থনৈতিকভাবেও লাভজনক। আর তাই সাম্প্রতিক সময়ে সোলশেয়ারের এই নতুন প্রজেক্টটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীদের মাঝে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।



সোলশেয়ারের সুবিধাসমূহ


১. বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ: সাধারণত দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। আর তাই উক্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে বিদ্যুৎ চাহিদা পূরনের জন্য সোলশেয়ার বেশ অনেকটাই সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।

২. পরিবেশবান্ধব: সোলশেয়ার সৌরশক্তি বা নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে থাকে। আর তাই এটি একটি পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবস্থা। এর পাশাপাশি সোলশেয়ারের এই প্রজেক্টের মাধ্যমে অনবায়ণযোগ্য শক্তির ব্যবহারও হ্রাস পাবে।

৩. অর্থনৈতিক উন্নয়ন:
সোলশেয়ারের মাধ্যমে উৎপাদিত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ পরবর্তী সময়ে অন্যান্য গ্রাহকদের কাছেও বিক্রি করা যায়। যা অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথেও অনেকটা সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে।

৪. জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন :
সোলশেয়ার মূলত প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীদের নিয়ে কাজ করে থাকে। আর তাই উক্ত অঞ্চলগুলোতে বসবাসকারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে সোলশেয়ারের মাধ্যমে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ চাহিদার পূরণও অনেকটাই সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে।

আরও পড়ুন : নাথিংফোন ২এ প্লাস: বাজেটের মধ্যে ফ্লাগশিপ ফোন

সোলশেয়ারের ভবিষ্যৎ

সোলশেয়ার ইতোমধ্যেই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে প্রায় ১২০টির অধিক পেয়ার টু পেয়ার মাইক্রোগ্রিড স্থাপন করেছে। এর পাশাপাশি পাইপলাইনে প্রায় ২৭ টিরও বেশি মেগাওয়াট সোলার রুফটপ স্থাপন করেছে সোলশেয়ার। সব মিলিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী অন্তত ৮০,০০০ জনের জীবনযাত্রার মানকে উন্নত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে সোলশেয়ার।

সোলশেয়ারের সহায়তায় আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী প্রতিনিয়তই একটি সবুজ, শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল ভবিষ্যতের দিকে ক্রমাগত এগিয়ে চলেছে। সোলশেয়ারের মাধ্যমে একদিকে যেমন জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হচ্ছে, ঠিক অপরদিকে অনবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার হ্রাসের মাধ্যমে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণও হ্রাস পাচ্ছে। যা একটি পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি ব্যবস্থা। সর্বোপরি বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন যে, সোলশেয়ারের এই নতুন উদ্ভাবনী পদ্ধতিটি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সংকট সমাধানে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। 

Post a Comment

Previous Post Next Post