চাঁদকে নিয়ে মানুষের আগ্রহ এবং বিস্ময়ের শেষ নেই। আর তাই যুগের পর যুগ ধরে মানুষ চাঁদকে কেন্দ্র করে নানান গল্প ও উপন্যাস তৈরি করে আসছে। প্রথমবারেরও মতো চাঁদের বুকে পা রেখেছিলেন নীল আমস্ট্রং। তারপর থেকেই চাঁদ মানুষের অনেকটা কাছাকাছি চলে এসেছে। বর্তমান সময়ে চাঁদ শুধুমাত্র রাতের আকাশে থাকা একটি উজ্জ্বল আলোর উৎস নয় বরং এটি একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রও হয়ে উঠেছে। আর তাই প্রতিনিয়তই চাঁদকে নিয়ে করা হচ্ছে নানান গবেষণা। সাম্প্রতিক সময়ে চাঁদে এক রহস্যজনক বস্তুর উপস্থিতির দাবি করছেন একদল চীনা বিজ্ঞানী। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম স্কাই নিউজ তাদের একটি প্রতিবেদনে জানায় যে, মহাকাশচারীরা চাঁদ পরিভ্রমণ শেষে, চাঁদ থেকে বিশেষ নমুনা সংগ্রহ করেছেন। উক্ত বিশেষ নমুনার মাঝে অন্তত ২৫ লাখ বছরের পুরনো এক আগ্নেয় শিলার কিছু নমুনাও থাকতে পারে।
আরও পড়ুন : ইউনিট্রি G1 হিউম্যানয়েড রোবট | ভবিষ্যতের কর্মী বাহিনী
সাম্প্রতিক সময়ে উক্ত নমুনা নিয়ে চীনের নভোযান চ্যাং-ই-৬ পৃথিবীতে ফিরে এসেছে। উক্ত নভোযানটি জুন মাসের শুরুর দিকে সংগ্রহ করা উক্ত নমুনাটিকে নিয়ে ফিরে এসেছে। গত ২৫ জুন (মঙ্গলবার) স্থানীয় সময় দুপুর ২:০০ টায় চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের উত্তর অংশে অবস্থিত ইনার মঙ্গোলিয়ান নামক অঞ্চলে উক্ত নভোযানটি প্রত্যাবর্তন করে। চীনা গবেষক দল দাবি করছেন যে উক্ত নমুনার মাঝে অন্তত ২৫ লক্ষ বছরের পুরনো এক আগ্নেয় শিলার উপস্থিতি রয়েছে। উক্ত নমুনাটিকে পরীক্ষা ও বিশ্লেষণ করার মাধ্যমে চাঁদের ভৌগোলিক অবস্থা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানা সম্ভব হবে।
এর পাশাপাশি চাঁদের ভূমিরূপ কেন্দ্রিক নানান অজানা রহস্যেরও সমাধান করা সম্ভব হবে। এই নমুনাটি চাঁদের ইতিহাস এবং গঠন সম্পর্কে নতুন তথ্য দিতেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। চীনা বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যেই এই রহস্যজনক নমুনাটিকে নিয়ে তাদের গবেষণার কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। সম্পূর্ণ গবেষণার কাজ শেষ হলে উক্ত নমুনা বস্তুটিকে নিয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। অনেকের মতে, মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে যাচ্ছে উক্ত নমুনা কেন্দ্রিক গবেষণার ফলে।
চাদঁ থেকে এমন দুর্লভ এবং রহস্যজনক নমুনা সংগ্রহ করার ফলে চীনও বহির্বিশ্বের কাছে বেশ সমাদৃত হচ্ছে। বিশেষ করে চাঁদের সবচেয়ে দূরবর্তী অংশ থেকে নমুনা নিয়ে আসার ফলে অনেকের কাছেই বেশ প্রশংসা দাবিদার হয়ে উঠেছে চীন। আরও উল্লেখযোগ্য যে, চীনই প্রথমবারের মতো চাঁদের এত দূরবর্তী স্থান থেকে কোনো নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে এসেছে। যেটা চীন এবং চীনা গবেষকদের জন্য বেশ গৌরবের।
ভবিষ্যতে চীনা বিজ্ঞানীরা এই জাতীয় নমুনা সংগ্রহ করে আরও বিস্তর গবেষণা করার আশা ব্যক্ত করেছেন। উক্ত রহস্যজনক নমুনাটিকে সংগ্রহের মাধ্যমে চীনা গবেষকরা তাদের মহাকাশ গবেষণার অঙ্গনটিকে একটি নতুন রূপদান করতে সক্ষম হয়েছেন। এবং উক্ত রূপদানের ধারাবাহিকতা তারা ভবিষ্যতেও বজায় রাখবেন, এমনটাই ধারণা করছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন : ওয়ানপ্লাস নর্ড ৪: বাজারের নতুন ফ্লাগশিপ
Post a Comment