প্রশ্নফাঁসে যে টাকা কামাই করেছি, সব খরচ করেছি আল্লাহর রাস্তায়: সৈয়দ আবেদ আলী

গত রবিবার (৭ জুলাই) একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেশের বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। উক্ত প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই নড়েচড়ে বসে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সরকারি চাকরির পরীক্ষা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষাসহ মোট ৩০ টি সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে বিপিএসসির ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তা সহ মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতারকৃত উক্ত ১৭ জনের মাঝে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান ড্রাইভার সৈয়দ আবেদ আলী এবং তার পুত্র সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামও রয়েছে।

বিভিন্ন সরকারি চাকরি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে প্রাপ্ত অর্থ কোথায় ব্যয় করেছেন, সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে সৈয়দ আবেদ আলী জানান, প্রশ্ন ফাঁসের সব টাকা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করেছেন তিনি।  সৈয়দ আবেদ আলীর এমন উত্তর ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। অনেকের কাছেই আবার এমন বক্তব্যে হাসিরপাত্র হয়ে উঠছেন সৈয়দ আবেদ আলী।

আরও পড়ুন : ইউনিট্রি G1 হিউম্যানয়েড রোবট | ভবিষ্যতের কর্মী বাহিনী

সৈয়দ আবেদ আলীর স্থায়ী ঠিকানা মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলার পশ্চিম বোতলা গ্রামে। এক সময় সামান্য একজন ড্রাইভার থাকলেও বর্তমানে তিনি তার নিজ গ্রামে তৈরি করেছেন বিলাসবহুল তিনতলা বাড়ি। এছাড়াও বাড়ির পাশে পাকা মসজিদ এবং একটি বাগানও তৈরি করেছেন তিনি। এক সময় সামান্য একজন ড্রাইভার থাকলেও বর্তমান সময়ে তিনি নিজেকে পরিচয়দেন ব্যবসায়ী বা শিল্পপতি হিসেবে। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি ডাসার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হওয়ার স্বপ্নও দেখেছিলেন।

সৈয়দ আবেদ আলীর প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি সামনে আসার পর পরই সামনে আসে তার পুত্র সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামের প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়টি। বাবার মতো ছেলেও ব্যবহার করতেন দামি বিলাসবহুল গাড়ি। যদিও সৈয়দ আবেদ আলীর এলাকার কেউই জানতো না যে তিনি এক সময় ড্রাইভারের চাকরি করতেন। বরং এলাকার সকলের কাছেই তিনি নিজেকে পরিচয় দিতেন একজন রিয়েল স্টেট ব্যবসায়ী হিসেবে। 


তার পুত্র সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম সাম্প্রতিক সময়ে একটি সমাবেশে তার দেওয়া একটি বক্তব্য বলেন যে, তার বাবা অনেক কষ্ট করে বর্তমানের এই স্থানে এসে দাঁড়িয়েছেন। তার বাবার বয়স যখন মাত্র আট বছর, তখন তিনি পেটের দায়ে ঢাকায় চলে আসেন। ঢাকায় আসার পর কুলিগিরি করে তিনি তার জীবন চালাতে থাকেন। সর্বশেষ মাত্র ৫০ টাকা দিয়ে তিনি তার ব্যবসা শুরু করেন এবং বর্তমান সময়ে এসে তিনি একটি লিমিটেড কোম্পানির মালিক হয়ে ওঠেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বাবা ছেলের প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর তালাবদ্ধ রয়েছে তাদের গ্রামের বাড়িতে। এমনকি সৈয়দ আবেদ আলীর কোন নিকট আত্মীয়-স্বজনদের সাথেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। উক্ত বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাদারীপুর সমন্বিত কার্যালয় এর বর্তমান উপ-পরিচালক আতিকুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান যে, যদি উক্ত বিষয়টিকে কেন্দ্র করে কেউ লিখিত অভিযোগ তাদের নিকট প্রদান করে, তবে তারা অবশ্যই প্রধান কার্যালয়ের সাথে সমন্বয় করে উক্ত অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করবেন।


Post a Comment

Previous Post Next Post