মোবাইল দিয়ে অনলাইনে জিডি করার নিয়ম

অনেকে মন্তব্য করে থাকেন যে, সরাসরি থানায় গিয়ে জিডি করতে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই নানান হয়রানির শিকার হতে হয়। তবে তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে আপনাদের কাউকেই এখন আর সরাসরি থানায় গিয়ে জিডি করতে হবে না। বর্তমানে আপনি আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোনের সাহায্যে খুব সহজেই জিডি করতে পারবেন এবং জিডির কপিটিও ডাউনলোড করে ফেলতে পারবেন।

অনলাইনে জিডি করার নিয়ম

অনলাইনে জিডি করার জন্য আপনার বেশ কয়েকটি জিনিসের প্রয়োজন হবে। অনলাইনে জিডি করার জন্য প্রথমেই আপনার প্রয়োজন হবে ইন্টারনেট সংযোগযুক্ত একটি মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ। এর পাশাপাশি আপনার এন আই ডি কার্ড বা ভোটার আইডি কার্ড এবং আপনার নিজস্ব একটি ই-মেইল আইডি থাকতে হবে। অনলাইনে জিডি করার জন্য প্রথমেই আপনাকে চলে যেতে হবে গুগল প্লে স্টোরে। 


প্লে স্টোরে গিয়ে আপনাকে অনলাইন জিডি অ্যাপসটিকে ডাউনলোড করে নিতে হবে। গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে অনলাইন জিডি লিখে সার্চ করলেই আপনারা এই অ্যাপসটিকে পেয়ে যাবেন। পরবর্তীতে ইনস্টল অপশনে চাপ দিয়ে, এই অ্যাপসটিকে ইন্সটল করে নিতে হবে আপনার মোবাইলে। এবার অনলাইন জিডি নামক অ্যাপসটিকে ওপেন করার সাথে সাথেই আপনার সামনে একটি নিবন্ধন বা লগইন পেইজ চলে আসবে। যেহেতু আপনি এরপূর্বে কখনোই অনলাইন জিডি অ্যাপসটিতে লগইন করেননি, তাই আপনাকে নতুন করে নিবন্ধন বা লগইন করে নিতে হবে। 

নিবন্ধন করার জন্য প্রথমেই আপনাকে নিবন্ধন নামক অপশনটিতে ক্লিক করে, আপনার মোবাইল নাম্বারটি দিয়ে দিতে হবে। পরবর্তীতে আপনার মোবাইল নাম্বারে একটি ছয় ডিজিটের কোড পাঠানো হবে, যেটিকে পরের পেইজে সাবমিট করতে হবে। এবার আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার বা ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার এবং আপনার জন্ম তারিখটিকে সাবমিট করতে হবে। ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার এবং জন্ম তারিখ সাবমিট করার পর "পরিচয় পত্র যাচাই" নামক অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। পরবর্তীতে আপনার পিতা মাতার নাম,পরিচয় পত্র নাম্বার এবং জন্ম তারিখসহ একটি পেইজ আপনার সামনে ওপেন হবে। উক্ত পেইজে দেখানো সকল তথ্যাদি যদি সঠিক হয়ে থাকে, তবে আপনাকে নিচের অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। 


নিচের অপশনটিতে ক্লিক করার সাথে সাথেই আপনার ফেস স্ক্যানিং শুরু হয়ে যাবে।সঠিকভাবে ফেস স্ক্যানিং করার জন্য প্রথমে আপনার মুখটিকে ক্যামেরার ঠিক মুখোমুখি অবস্থানে রাখতে হবে। তারপরেও যদি ফেস স্ক্যানিংয়ে সমস্যা দেখা দেয়, তবে মুখটিকে হালকা ডানে এবং হালকা বামে ঘুরিয়ে চেষ্টা করতে হবে। ফেস স্ক্যানিং সম্পন্ন হয়ে গেলে আপনাকে একটি পাসওয়ার্ড দিয়ে দিতে হবে। পাসওয়ার্ডে অন্তত একটি বিশেষ অক্ষর এবং সর্বনিম্ন আটটি অক্ষরের পাসওয়ার্ড নির্বাচন করতে হবে। পাসওয়ার্ড দিয়ে দেওয়ার পর নিচে থাকা অপশনটিতে ক্লিক করার সাথে সাথেই আপনার নিবন্ধনের কাজটি শেষ হবে এবং আপনার একাউন্টটি তৈরি হয়ে যাবে। 

এ পর্যায়ে সাকসেস (প্রি রেজিস্ট্রেশন সফল হয়েছে) নামক একটি মেসেজ আপনার সামনে চলে আসবে এবং আপনাকে ওকে অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। ওকে অপশনে ক্লিক করার পর আপনাকে আপনার মোবাইল নাম্বার এবং পাসওয়ার্ডটি দিয়ে অ্যাপটিতে লগইন করে নিতে হবে। লগইন করার পর আপনার সামনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ঠিকানা চলে আসবে। আপনাকে শুধুমাত্র নিশ্চিত করতে হবে যে আপনার ঠিকানাগুলো (বিভাগ, জেলা, উপজেলা) সব ঠিক আছে কিনা। আপনার ঠিকানা ঠিকঠাক থাকলে, "পরবর্তী" নামক অপশনটিতে ক্লিক করে পরের পেইজে যেতে হবে। পরের পেইজে গিয়ে আপনাকে আপনার স্বাক্ষরটি দিয়ে দিতে হবে। সঠিকভাবে স্বাক্ষর দেওয়ার পর আপনাকে সংরক্ষণ নামক অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। সংরক্ষণ অপশনে ক্লিক করে পরবর্তী পেইজে গিয়ে, আপনাকে আপনার মোবাইল অপারেটরের নাম এবং ই-মেইল এড্রেসটিকে সাবমিট করে দিতে হবে। সবকিছু সাবমিট করার পর আপনার সামনে একটি ড্যাশবোর্ড ওপেন হবে। ড্যাশবোর্ডে আপনি বেশ কিছু অপশন দেখতে পাবেন। 


যদি আপনার কোনকিছু হারানো গিয়ে থাকে, তবে ড্যাশবোর্ডের নিচের দিকে থাকা "হারানো" নামক অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। উক্ত অপশনটিতে ক্লিক করার পর আপনার সামনে যানবাহন, কম্পিউটার, মোবাইল  ডকুমেন্ট, কার্ডসমূহ, গয়নাসহ অন্যান্য নামক বেশ কয়েকটি অপশন চলে আসবে। উদাহরণ হিসেবে যদি আপনার মোবাইল ফোন হারিয়ে গিয়ে থাকে, তবে আপনাকে "মোবাইল" নামক অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করার পর আপনার মোবাইলটির বর্ণনা, কোন জায়গা থেকে হারিয়েছে, কখন হারিয়েছে এবং মোবাইলের আইএমইআই নাম্বারটিকে সাবমিট করতে হবে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে আসা তথ্যগুলোকে ফিলাপ করে, সাবমিট করে দিলেই আপনার জিডিটি সংশ্লিষ্ট থানায় চলে যাবে। 

আপনার জিডি সম্পর্কিত যেকোনো ধরনের আপডেট, আপনার মোবাইল নাম্বারে পরবর্তী সময়ে মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। আপনি চাইলে আপনার জিডির একটি কপি ডাউনলোড করে প্রিন্টআউট করেও রাখতে পারেন। 

Post a Comment

Previous Post Next Post