এসিডিটি নিরাময়ে কার্যকরী পাঁচটি ফল

এসিডিটি বা অম্বল আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অতি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। বর্তমান সময়ে এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনধারার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হয়ে পড়েছে। মূলত অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার গ্রহণ, অনিয়মিত খাবার গ্রহণ, অতিরিক্ত চা বা কফি, ধূমপান, অ্যালকোহল এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণেই এসিডিটি বা অম্বল হয়ে থাকে।

পেটে জ্বালাপোড়া, পেটে অতিরিক্ত গ্যাস, বুক জ্বালা, ঘনঘন ঢেকুর তোলা এবং বমি বমি ভাব ইত্যাদি লক্ষণগুলো মূলত এসিডিটি বা অম্বলের সমস্যাকেই নির্দেশ করে। তবে প্রকৃতি আমাদের এমন কিছু ফল দিয়েছে যা আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এসিডিটি বা অম্বলের সমস্যাকে নিরাময়ে সাহায্য করে ।

১. কলা

যে সকল ফল প্রাকৃতিকভাবে এসিডিটি বা অম্বলের সমস্যাকে দূর করে সেগুলোর মাঝে কলা অন্যতম। কলা উচ্চ পিএইচ স্তরের একটি ফল হওয়ায় এটি প্রাকৃতিকভাবে অম্লতা নিরাময় কার্যকর। কলা পাকস্থলীর মিউকাস উৎপাদন বাড়ায় যা পাকস্থলীর অভ্যন্তরে থাকা পেপটিক এসিড বা হাইড্রোক্লোরিক এসিডকে প্রশমিত করে। কলার মাঝে থাকে পটাশিয়াম যা পাকস্থলীর পিএইচ স্তরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।এছাড়াও কলায় রয়েছে ভিটামিন বি৬ এবং ভিটামিন সি, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী ।

২.তরমুজ

শরীরকে হাইড্রেট রাখতে অর্থাৎ পানি শূন্যতার হাত থেকে রক্ষা করতে তরমুজ অত্যন্ত উপযোগী একটি ফল। একটি তরমুজে শতকরা ৯৩ শতাংশ পানি এবং ফাইবার থাকে যা আমাদের শরীরকে শীতল রাখতে এবং পানি শূন্যতার হাত থেকে রক্ষা করে। এর পাশাপাশি তরমুজে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি এবং ফাইবার যা  আমাদের হজমের সমস্যাকে দূর করার মাধ্যমে আমাদেরকে এসিডিটির হাত থেকেও রক্ষা করে।



৩.পেঁপে

পেঁপেতে অধিক পরিমাণে ফাইবার এবং প্যাপেইন নামক এনজাইম থাকে যা আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কাঁচা পেঁপে গ্যাস ও অম্লতা কমাতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি নিয়মিত পেঁপে খেলে হজমের সমস্যা দূর হওয়ার পাশাপাশি পাকস্থলী স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে। আর তাই এসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।

আরও পড়ুন :  ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ হেলথ টিপস 

৪.আপেল

আপেল ফাইবার সমৃদ্ধ একটি পুষ্টিকর ফল।ফাইবার ছাড়াও আপেলে রয়েছে ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ভিটামিন কে, ভিটামিন এ, ভিটামিন ই, ম্যাঙ্গানিজ ও কপার। কলার মত আপেলেরও উচ্চ পিএইচ স্তর থাকায়, এটিও পাকস্থলীর এসিড নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত সহায়ক। এর পাশাপাশি আপেলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অনেকাংশেই ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়।

৫.ডাবের পানি

ডাবের পানি এক ধরনের প্রাকৃতিক ইলেকট্রোলাইট যা শরীরকে সতেজ এবং হাইড্রেট রাখতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ডাবের পানি পাকস্থলীর অম্লতা কমাতে ভূমিকা রাখে। এর পাশাপাশি ডাবের পানি পান করলে পেটের নানা সমস্যা দূর হয় এবং শরীর সতেজ থাকে।

নিয়মিত এই ফলগুলো খাদ্য তালিকায় রাখার পাশাপাশি কিছু নিয়ম মেনে চললে এবং জীবনধারায় সামান্য কিছু পরিবর্তন আনলে খুব সহজেই এই এসিডিটির সমস্যাটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। বিশেষ করে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ কমানো ইত্যাদি এসিডিটির সমস্যা নিরাময়ে অত্যাধিক সাহায্য করে থাকে।

আশা করি উপরোক্ত তথ্য এবং পরামর্শগুলো আপনাদের সুস্থ জীবনধারণের পথকে সহজ করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন!

Post a Comment

Previous Post Next Post