দেশব্যাপী পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে ৮ জন গুলিবিদ্ধ

দেশব্যাপী চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থী এবং পুলিশের মাঝে সংঘর্ষ চলমান।  চলমান পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে সারা দেশব্যাপী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন অন্তত ৮ জন এবং হতাহতদের সংখ্যা প্রায় কয়েক শতাধিক।

আজ (১৮ জুলাই) সকাল ৯ টার দিকে রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার শনিরআখড়ায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের সৃষ্টি হয় । এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এমতাবস্থায় আন্দোলনকারীদের দিকে লক্ষ্য করে রাবার বুলেট, টিয়ার শেল এবং গুলি চালাতে থাকে পুলিশ সদস্যরা। 

এ সময় পুলিশের গুলিতে দুই বছরের এক শিশু এবং দুইজন পথচারীসহ মোট ৬ জন গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ দুই জন পথচারীর মাঝে একজন হলেন রিয়াদ সিকদার, যিনি একজন দোকান কর্মচারী এবং আরেকজন হলেন অটোরিক্সা চালক আশরাফুল। গুলিবিদ্ধ বাকি চারজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি।গুলিবিদ্ধদের খুব দ্রুতই উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা সূত্রে আরও জানা যায় যে, গুলিবিদ্ধদের মাঝে দুইজনের অবস্থা খুবই গুরুতর।


অপরদিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে টাঙ্গাইল জেলা। আজ (১৮ জুলাই) বেলা ১০টা থেকে দফায় দফায় টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশ এবং আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এতে মুহূর্তের রণক্ষেত্রে পরিণত হয়ে ওঠে টাঙ্গাইল জেলা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ একপর্যায়ে রাবার বুলেট এবং টিআর শেল নিক্ষেপ করতে থাকে। ফলশ্রুতিতে এক পর্যায়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। শিক্ষার্থী ও পুলিশের মাঝে চলমান এই সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি চালালে, দুই জন শিক্ষার্থীর পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়।

এ ঘটনায় টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার জনাব গোলাম সবুর বলেন যে, শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক অতিক্রম করে এক পর্যায়ে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে পুলিশ রাবার বুলেট এবং টিয়ারশীল নিক্ষেপ করেও পরিস্থিতি শান্ত করতে না পারায়, এক পর্যায়ে গুলি চালাতে বাধ্য হয়।



অপরদিকে সাভারে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সকাল থেকেই রেডিও কলোনি এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। বিক্ষোভ মিছিলের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ ঘটনা এ পথচারীসহ অন্তত ৫ জন গুরুতর আহত হন। ইতোমধ্যেই আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাভারের পাশাপাশি চট্টগ্রাম, রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশ সদস্যদের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলমান রয়েছে। 


বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর টিয়ার শেল এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেও কোনোভাবেই পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না পুলিশ সদস্যরা। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার উত্তরা, রামপুরা এবং বাড্ডা এলাকা ইতোমধ্যেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। রাজধানীর উক্ত এলাকাগুলোতে বর্তমান সময়ে গুরুতর আহতদের সংখ্যা প্রায় কয়েক শতাধিক। 

Post a Comment

Previous Post Next Post