জামালপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও পানিবন্দি লক্ষাধিক মানুষ

ব্রহ্মপুত্র এবং যমুনা নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ,মাদারগঞ্জ,মেলান্দহ,বকশীগঞ্জ এবং ইসলামপুরসহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়ে প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ। বিগত কয়েকদিন থেকে হয়ে আসা টানা ভারী বর্ষণের ফলে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্ট এবং সরিষাবাড়ী উপজেলার জগন্নাথগঞ্জঘাট পয়েন্টে বন্যার পানি ক্রমান্বয়ে বিপদসীমার ৯০ সেন্টিমিটার এবং ১২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইতে শুরু করে। 

যার ফলে উক্ত উপজেলাগুলোর বিচ্ছিন্ন অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে যেতে শুরু করে। এর পাশাপাশি শুরু হয় উক্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের পানিবন্দি জীবন। ইতোমধ্যে জামালপুর জেলার ৬টি উপজেলার ৩৩ টি ইউনিয়নের প্রায় ৭৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রবল বন্যায় বসতবাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় অনেকটাই বিপাকে পড়েছে গবাদি পশু এবং পানিবন্দি পরিবারগুলো।

আরও পড়ুন : ইউনিট্রি G1 হিউম্যানয়েড রোবট | ভবিষ্যতের কর্মী বাহিনী

তবে গত সোমবার (৮ জুলাই) থেকে উক্ত অঞ্চলগুলোর বন্যা পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নতি লাভ করেছে। ইতোমধ্যেই সরিষাবাড়ীর জগন্নাথগঞ্জঘাট পয়েন্ট এবং দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি যথাক্রমে প্রায় ২ সেন্টিমিটার এবং ৬ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার এবং ৮৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছেন।



বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সাথে সাথে বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ইতোমধ্যেই বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও এখনো পানিবন্দি প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। বিশেষ করে যোগাযোগ সড়ক এবং বসতভিটা ডুবে যাওয়ায় বেশ দুর্ভাগ্য পোহাতে হতে হচ্ছে উক্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের। এর পাশাপাশি বৃদ্ধি পেয়েছে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ। বন্যা পরিস্থিতির কারণে জেলার প্রায় ১৫২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং বন্যা দুর্গতদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে প্রায় ১৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র। যেখানে প্রায় কয়েক হাজার পরিবার আশ্রয় গ্রহণ করেছে। এর পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যা দুর্গতদের সহযোগিতার জন্য ত্রাণ সহায়তার ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে। 

ইতোমধ্যেই বন্যা দুর্গতদের জন্য প্রায় ১ হাজার ১০০ মেট্রিক টন চাল, প্যাকেট শুকনো খাবার এবং নগদ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে জামালপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এর পাশাপাশি বন্যা দুর্গতদের সহযোগিতার জন্য ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। সর্বোপরি বন্যা দুর্গতদের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণের সঠিক বন্টনের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য প্রশাসনের নিকট অনুরোধ জানিয়েছে পানিবন্দি বাসিন্দারা। তাদের আশা, হয়তো প্রশাসনের সুনজর তাদেরকে এই মানবেতর অবস্থা থেকে মুক্ত করতে অনেকটাই সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post